কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সবাই অনেক অনেক ভালো আছেন। আপনারা জানেন আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে হ্যান্ড পেইন্টিং নিয়ে কথা বলে থাকি। সেই ধারাবাহিকতা থেকে আজকের আলোচনা হ্যান্ড পেইন্টিংকে কিভাবে পেশা এবং সফলতার পুঁজি হিসেবে তৈরি করতে পারেন? এই বিষয় নিয়ে। আশা করি সবার অনেক ভালো লাগবে এবং কাজে আসবে।
হ্যান্ড পেইন্ট বর্তমান সময়ের ভীষণভাবে আলোড়ন ফেলা একটা বিষয়। পোশাকের সাজসজ্জা,ফ্যাশন, ঐতিহ্য আর যুগের সাথে তাল মিলিয়ে রং তুলির এই খেলা আজ কারও শখ,কারও নেশা আবার কার কারও পেশা।
কাপড়ে অনেক আগে থেকেই হ্যান্ড পেইন্টিং এর প্রচলন থাকলেও তা গুটিকয়েক মানুষের শখের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। তবে আজ হ্যান্ড পেইন্টিং আলোচনার তুঙ্গে মূলত উদ্যোক্তাদের হাত ধরেই।আবার হ্যান্ড পেইন্টিংকে কেন্দ্র করেই আজ হাজারো উদ্যোক্তা সফলতার ছোয়া পাচ্ছে।
![how to make hand painting your profession](https://handpaintdress.com/wp-content/uploads/2023/10/how-to-make-hand-painting-your-profession.jpg)
উদ্যোক্তারা কেনো হ্যান্ড পেইন্টিংকে তাদের পেশা এবং সফলতার পুঁজি হিসেবে বেছে নিচ্ছে জানেন কি?
হ্যান্ড পেইন্ট মানেই রং তুলির আঁচড় দিয়ে নিজের পোশাককে মনের মত রং এবং নকশায় এক ভিন্ন রুপ দেয়া। আর তাই প্রাথমিকভাবে হ্যান্ড পেইন্টিং শুরু ক্ষেত্রে বিশেষ কোন দক্ষতা ছাড়া এবং অতি সামান্য পুঁজি নিয়েই শুরু করতে পারেন।তবে পেশা হিসেবে নিতে চাইলে অবশ্যই চর্চার মাধ্যমে দক্ষতার উন্নতি করতে হবে যাতে আপনার পেইন্ট করা পোশাক হয়ে ওঠে দৃষ্টিনন্দন এবং আরামদায়ক।
হ্যান্ড পেইন্ট করতে কি কি প্রয়োজন?
কাপড়, রং,তুলি,ক্যামিক্যাল এবং ফ্রেম।এই চারটি উল্লেখযোগ্য উপাদান ব্যবহার করেই আপনি আপনার উদ্যোগের শুরু করতে পারেন।
কাপড় – যে কোনো ধরনের কাপড়ে হ্যান্ড পেইন্টিং করা যায়। সুতি,জর্জেট,সিল্ক ইত্যাদি।
রং- ফেব্রিক কালার মূলত ২ধরনের। এক্রেলিক এবং এক্রামিন। এক্রামিন কালার কাঁচা এবং রেডি ২ভাবেই পাওয়া যায় রেডি এক্রামিন সরাসরি এবং কাঁচা এক্রামিন ক্যামিক্যাল এর সাথে মিশিয়ে কাপড়ে ব্যবহার করা যায়। এক্রামিন কালারে খরচ বেশ কম এবং প্রফেশনালি পেইন্ট শেখার জন্য সবথেকে ভালো মাধ্যমে এটি।
এক্রেলিক বিভিন্ন ব্যান্ডের নামে ছোট বক্সে একই সাথে ৬-১০টি পাওয়া যায়।তবে এক্রেলিক কালার দিয়ে পেইন্ট করায় খরচ তুলনামূলক বেশি।
তুলি– পেইন্টিং এর জন্য ওয়েল কালার ব্রাশ এবং ওয়াটার কালার ব্রাশ ২ধরনের তুলি দেখা যায় সাধারণত। ০ থেকে শুরু করে যে কোনো সাইজের তুলি পাওয়া যায়।সঠিক তুলি ব্যবহারের মাধ্যমেই অনেক স্বল্প সময়ে পেইন্ট এর কাজ শেষ করা যায়।
ক্যামিক্যাল – বাজারে এনকে,বাইন্ডার,নিউটেক্স,এপ্রিটন,হোয়াইট পেস্ট,অক্সেল,সি সি এল,এম পি ৬০ইত্যাদি ক্যামিক্যাল পাওয়া যায়। সাধারণভাবে সঠিক পরিমাণেবাইন্ডার এবং এনকে মিশিয়ে রং বানিয়ে পেইন্ট করা যায়।ক্যামিক্যাল মিশিয়ে পেইন্ট করা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে আপনার জ্ঞান, চর্চা এবং দক্ষতার ওপর। সঠিক অনুপাতে ক্যামিক্যাল মিক্সিং এর মাধ্যমে পেইন্ট করার পরেও কাপড়টি থাকে একদমই নরম ও আরামদায়ক। ক্যামিক্যালের পরিমাণ কাপড়ভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে।
ফ্রেম– যে কাপড়ে পেইন্ট করা হয় তা সঠিক ভাবে আটকে নেয়ার জন্য সঠিক মাপের ফ্রেমে আটকে নেয়া জরুরি।এতে করে কাপড়ে বিভিন্ন জায়গায় রং লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
হ্যান্ড পেইন্টিংকে পেশা এবং সফলতার পুঁজি হিসেবে তৈরি করতে যেসব বিষয় খেয়াল রাখা উচিৎ –
১. কাপড়ের জন্য রং ব্যবহৃত রং টেকসই হতে হবে।
২. পেইন্ট করার কমপক্ষে ১৫ দিনের ভেতর কাপড় ধোঁয়া যাবে না।
৩. কাপড় পেইন্ট করার পর ও যেন কাপড়ের নমনীয়তা বজায় থাকে সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি।
৪. হ্যান্ড পেইন্টেড পোশাকের মূল্য নির্ধারণে বিশেষ সচেতন থাকতে হবে।
৫. কাপড় পেইন্ট এর পর শক্ত বা আঠালো না হয়ে যায় যেন সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি।
৬. কড়া রোদে না শুকিয়া ছায়াযুক্ত স্থানে কাপড় শুকিয়ে নিতে হবে।
৭. শুকানোর পর উল্টো পাশে অবশ্যই আয়রন করে নিতে হবে।
৮. দ্রুত কাজ করার জন্য উপযুক্ত তুলি ব্যবহার করতে হবে।
৯. গরম পানিতে অতিরিক্ত ক্ষারযুক্ত সাবান পানিতে হ্যান্ড পেইন্টেড পোশাক ধোয়া যাবে না।
১০. সম্ভব হলে হ্যান্ড পেইন্টেড পোশাক ড্রাই ওয়াশ করতে হবে।
এভাবেই অতি সহজেই আপনি হ্যান্ড পেইন্টিং কে আপনার উদ্যোগের অন্যতম সুযোগ হিসেবে বেছে নিতে পারেন। আজকের লেখাতে হ্যান্ড পেইন্টিং এর যাবতীয় বিষয় তুলে ধরলাম। এছাড়াও হ্যান্ড পেইন্টিং নিয়ে আপনার যে কোনো জিজ্ঞাসা কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিয়ে দিতে পারেন। হ্যান্ড পেইন্টিংকে কিভাবে পেশা এবং সফলতার পুঁজি হিসেবে তৈরি করতে পারেন? এই আলোচনা আপনার কেমন লাগলো কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।
ধন্যবাদ।
Article Writer: Tabassum Jim
One thought on “হ্যান্ড পেইন্টিংকে কিভাবে পেশা এবং সফলতার পুঁজি হিসেবে তৈরি করতে পারেন?”