Hand Painting

হ্যান্ড পেইন্টেড ড্রেস বা হাতে আঁকা পোশাক

hand painted panjabi

আসসালামু-আলাইকুম, বর্তমানের জনপ্রিয় নান্দনিক পোশাক “হ্যান্ড পেইন্টেড ড্রেস / হাতে আঁকা পোশাক” সম্পর্কিত সমাচার এ আপনাকে স্বাগতম। হাতে আকা পোশাক সম্পর্কে আমারা কম বেশি সবাই জানি। যারা হ্যান্ড পেইন্ট নিয়ে কাজ করেন বা হ্যান্ড পেইন্টেড পোশাক ব্যবহার করেন আজকের কথা গুলো তাদের জন্য। আশা করি আজকের লেখাটি আপনাদের অনেক বেশি কাজে আসবে। 

হ্যান্ড পেইন্টেড ড্রেস বা হাতে আঁকা পোশাক

বিবর্তন এবং যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে মানুষের রুচিবোধ তবে আবর্তিত হচ্ছে নতুন রূপে। তারই এক জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত বর্তমানের হাতে একা পোশাক বা হ্যান্ড পেইন্টেড ড্রেস। যা একসময় মানুষের পছন্দের তালিকায় ছিল তবে সীমিত সংখ্যক। বাঙালির আবর্তমান কালচারের অন্যতম পরিচায়ক এটি। কোনো উৎসব, আয়োজন বা বিশেষ দিন কে বহুগুণে বিশেষ করে তুলতে হাতে আঁকা পোশাকের জুড়ি নেই নিঃসন্দেহে। তাই তো দেখা মিলছে পরিবারের সকল সদস্যের এক রকম পোশাকে একরকম নকশার সাজে। কিংবা প্রিয় মানুষটার সাথে নিজেকে একরকম পোশাকে সাজিয়ে নিতে হাতে আঁকা পোশাক কেই বেছে নিচ্ছে তরুণ তরুণী বা মধ্যবয়স্ক জুটি রাও। অথবা কেউ শুধু নিজের জন্যই মন মতই যেকোনো নকশা বেছে নিয়ে মন মত রঙের পোশাকে গুণী শিল্পীদের মাধ্যমে রাঙিয়ে নিচ্ছে। 

hand painted panjabi
Hand Painted Panjabi By Meherun Nesa

হাতে আঁকা পোশাক এর সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে হাতে আঁকা পোশাকের শিল্পী রা। তাদের রঙ বাহারী তুলির ছোঁয়ায়  সাদা মাটা কাপড় কে রাঙিয়ে তুলছে অন্যন্য রূপে… এ যেন ম্যাজিশিয়ান এর ম্যাজিক স্টিক!! ছু মন্তর ছু বলে লাঠি ঘুরাচ্ছে আর ঝিলিমিলি আলো দিয়ে সব পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে।  নাহ্ আসলে তা নয়! হাতে আঁকা পোশাকের শিল্পী দের নিরলস শ্রম এবং নিপুণ দক্ষতাই এই ম্যাজিক মন্ত্র এবং রঙের তুলি তাদের ম্যাজিক কাঠি। একরঙা কাপড়কে বাহারী রঙে বাহারী ডিজাইন এ সাজিয়ে তুলতেই তারা ব্যস্ত। তাদের ক্যানভাস হয়ে ওঠে সেই পোশাক গুলো। কখনো ক্যানভাস হয়ে ও ১২ হাতের শাড়ি কখনো পাঞ্জাবি কখনো বা কামিজ। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে পরিবর্তিত হচ্ছে তাদের অঙ্কনের বিষয়বস্তু। প্রাকৃতিক দৃশ্য, ফুলের গুচ্ছ, বা কোনো নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু কে কেন্দ্র করে সেজে ওঠে তাদের ক্যানভাস। হাতের নাগালে পছন্দ মতো বিষয়কে পোশাকে সাজিয়ে পরিধানের অন্যতম মাধ্যমে হাতে আঁকা পোশাক যার গুণমান নির্ভর করে শিল্পীর নিপুণতার ওপর। 

আমাদের দেশে হাতে আঁকা পোশাক

বছরখানেক আগেও হাতে আঁকা পোশাক সাধারণ মানুষের কাছে তেমন পরিচিত ছিল না। তখনকার সময় হাতে আঁকা পোশাক বলতে মানুষ পহেলা বৈশাখ বা ফাল্গুন কে কেন্দ্র করে সাদা হলুদ শাড়িতে ঢাক, ঢোল, ঢেঁড়স, একতারা এসব চিনতো। নৈপুণ্যতার অগ্রগতিতে পাল্টেছে এসব একঘেয়ে নকশা। শিল্পীদের রুচিপূর্ণ বিষয়বস্তু এবং একে অপরের সাথে প্রতিযোগী মনোভাব থেকেই নিত্যনতুন নকশা কে কেন্দ্র করে এগিয়ে যাচ্ছে হাতে আঁকা পোশাক। সম্প্রীতি করোনাকালীন সময়ে অবসরে বাসায় থেকে বিভিন্ন ছাত্রছাত্রীরা আঁকতে ভালোবাসার সূত্র ধরেই উদ্যোগ নিয়েছে হাতে আঁকা পোশাক কে কেন্দ্র করে।  যারা একসময় ক্যানভাসে আঁকতো তারা এখন পোশাকে আঁকছে। ফলস্বরূপ বিপুলসংখ্যক শিল্পী হাতে আঁকা পোশাকের সাথে সংযুক্ত হয়ে গেছে এবং প্রসার ঘটছে হাতে আঁকা পোশাকের। এখন নতুন করে হাতে আঁকা পোশাক বহুল প্রচলিত এবং সবার কাছে সমাদৃত যেটা বছরখানেক আগেও বিলুপ্তপ্রায় ছিল। বাংলার ঐতিহ্যের একটি বিশেষ শাখার নতুন করে প্রস্ফুটিত হয়েছে। 

হ্যান্ড পেইন্টেড ড্রেস বা হাতে আঁকা পোশাক তৈরির পদ্ধতি

এবার হাতে আঁকা পোশাকের তৈরীর সাধারণ কিছু পদ্ধতি বা কি কি প্রয়োজন সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক! শিল্পী ইচ্ছে হলেই সবাই হতে পারেনা তবে নিজের জগতের শিল্পী হতে কোনো বাধা নিয়ম কানুন নেই তবে কিছু নিয়ম কানুন আছে ও। সেই সুবাদেই জেনে নেওয়া যাক কিছুটা পদ্ধতি…?!

প্রধান উপকরণ রং এবং নির্বাচিত পোশাক। এখানে ফেব্রিক রং ব্যবহার করা হয় যেটা ধুলেও উঠবে না। 

বাজার থেকে প্রস্তুত করা রং কিনে এনে আপনি কোনো নিয়ম ছাড়াই ইচ্ছে মত এঁকে নিতে পারেন আপনার পোশাক টি। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন সেই ফেব্রিক রং আসল এবং ভালো মানের হয়। 

হ্যান্ড পেইন্টেড ড্রেস বা হাতে আঁকা পোশাকে রঙ এর ব্যবহার

এখানে দুই রকম রং পাওয়া যায়। একটা এক্রেলীক অন্যটা এক্রামিন। একরেলিক্ রং টা সব কিছু প্রস্তুত করাই থাকে, আলাদা করে কোনো কেমিক্যাল মেশাতে হয় না, তবে চাইলে রং এর ঘনত্ব আরো কিছুটা পাতলা করতে সাথে অল্প একটু পরিমাণের মিডিয়াম বা বাইন্ডার, এনকে ইউজ করতে পারেন। 

এক্রমীন রং টাও রেডি হিসেবে পাওয়া যায়। পরিমাণে বেশি থাকে এবং খরচ কম হয়। প্রফেশনাল কাজের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ আর্টিস্ট রাই  এক্রামিন এর কাচা রং এবং সাথে অন্যান্য কেমিক্যাল কিনে নিয়ে নিজেরাই সেই রং প্রস্তুত করে থাকে। নির্বাচিত কাপড়ের কালার ভেদে রং এর প্রস্তুত প্রণালী ভিন্ন হয়ে থাকে। আবার কাপড়ের ধরন বুঝেই সেটা ভিন্ন হয়ে যায়। 

যেমন সুতি, লীলেন, মসলিন একেক মেটেরিয়াল এর পোশাকের রং প্রস্তুত প্রণালী একেক রকম। হালকা রঙের সুতি কাপড়ের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হবে প্রধানত বাইন্ডার , এনকে এবং এক্রামিন এর কাচা রং টা। যেটাকে প্রচলিত ভাষায় “র কালার” বলা হয়। দুই চামচ বাইন্ডার এর সাথে এক চামচ এনকে দিয়ে মিশিয়ে মোট কেমিক্যাল এর ২০% ‘ র কালার ‘ টা দিয়ে ভালো ভাবে মিশিয়ে নিলেই প্রস্তুত হয়ে যাবে আপনার কাপড়ে ব্যবহারের উপযুক্ত রং। 

hand painted dress / sharee
Hand Painted Panjabi By Meherun Nesa

পুনরায় গাঢ় রঙের একটা কাপড়ের জন্য রং বানাতে আগের নিয়মে প্রস্তুতকৃত রঙের মধ্যে ১০% এপ্রিটন মিশিয়ে দিলেই রং টা গাঢ় কালার কাপড়ের জন্য উপযোগী হয়ে যাবে। 

সাথে প্রয়োজন হবে তুলি। এবার পোশাকে আঁকতে প্রথমে কাপড়টা টানটান করে কিছুর সাথে আটকাতে হবে। হতে পারে ফ্রেম বা অন্য কোনো কিছু। ফ্রেমে বিছানো কাপড়ে নিচে শুন্য অবস্থান  রাখাই শ্রেয়। অর্থাৎ এমন ভাবে রাখা যেন কাপড়ের সাথে নিচে কিছু না লেগে যায়। তাহলে রং টা চুপসে নিচের বস্তুটাকে নষ্ট করবে। আর যদি তেমন টা সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে নিচে অব্যবহিত কোনো কাপড় বা পলিথিন জাতীয় কোনো প্রতিরোধী সতর্কতার ব্যবস্থা রাখা প্রয়োজন। মনে রাখতে হবে কাচা অবস্থায় রং টা অন্য কিছুর সংস্পর্শে থাকলে সেখানেও লেগে যাবে। 

আঁকার আগে যেকোনো মনমতো নকশা নির্বাচন করে নিতে হবে। এবং সেটা যথা স্পষ্ট পেন্সিল বা চক দিয়ে স্কেচ করে নিতে হবে। স্কেচ ছাড়াই অনেকে আঁকতে পারদর্শী হয়ে থাকে। এরপর ইচ্ছে মত রং তুলি তে নিয়ে পছন্দ মত দৃশ্য একে নিতে পারবে। একটা রঙের ওপর আরেকটা রঙের প্রলেপ দিতে চাইলে প্রথমে দেওয়া রং টা শুকনো পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে নয়তো দুটো রং  মিশে যাবে। আঁকা শেষে অপেক্ষা করতে হবে নয়তো দুটো রং  মিশে যাবে। আঁকা শেষে অপেক্ষা করতে হবে রং টা শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত। এবার এটাকে কড়া রোদে শুকাতে হবে অন্তত একদিন। এরপর আঁকা অংশের উল্টো পাশে তাপ দিয়ে বা আয়রন করে নিলেই ব্যবহারের উপযোগী হয়ে যাবে কাঙ্ক্ষিত হাতে আঁকা পোশাক। 

কাপড়ে আঁকতে গিয়ে যে যে সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন

১. প্রথম সমস্যা হতে পারে রং ভালো না হওয়া। রং কেনার সময় অবশ্যই বিশ্বস্ত কোনো জায়গা থেকে কিনতে হবে নিশ্চিত হয়ে। নয়তো রং উঠে যাওয়ার  মত একটা মুখ্য সমস্যার সম্মুখিত হতে হতে পারে।

২. নির্বাচিত কাপড়ের জন্য রং টা অতিরিক্ত পাতলা বা ঘন হয়ে যেতে পারে। পাতলা হলে রং টা ছড়িয়ে পরবে। এতে করে নকশা টা কাঙ্ক্ষিত হবে না। এটা প্রতিরোধ করতে রং এর সাথে কিছুটা এপ্রিটন মিশিয়ে নিলেই রং টা ঘন হয়ে যাবে। আর যদি ঘন হয়ে যায় বেশি তখন সাথে কিছুটা বাইন্ডার এবং এনকের মিশ্রণ দিয়ে ভালো ভাবে মিশাতে হবে। তবে পরিমাণ মত বা সামান্য। 

৩. রঙ করার অংশের কাপড় এর নিচে কাগজ জাতীয় কিছু না রাখা। এতে করে রং এর তরল সংস্পর্শে এসে সেটা কাপড়ের সাথে লেগে যাবে। এবং শুকিয়ে গেলে সেটা ওঠানো দুষ্কর হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যেন নিচে কিছু না থাকে বা তরল রোধি কোনো বস্তু রাখতে। 

৪. তুলি দিয়ে কাজ করার সময় তুলি পানিতে ধুয়ে  ভালো ভাবে মুছে নিতে হবে, নয়তো তুলির সাথে উঠে আশা পানির কারণেও রঙ কাপড়ে দেওয়ার পর ছড়িয়ে যেয়ে নকশা নষ্ট করতে পারে। 

৫. রং করার পর জায়গা টা শক্ত অনুভূত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটাই স্বাভাবিক। তবে কথা সম্ভব কাপড় কে নমনীয় রাখার চেষ্টা করতে হবে। এক্ষেত্রে রং এর সাথে পানি মিশাতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে পানির পরিমাণ যেন বেশি না হয়। এবং সাথে বাইন্ডার এনকে ও মিশাতে হবে। 

৫. রং করার সময় অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে সেটা নকশার বাইরের অংশে লেগে যেতে পারে, জার কারণে পোশাক টাই অনেক সময় নস্ট হয়ে যায়। এটা প্রতিরোধ করতে শৈল্পিক গুন দিয়ে সেখানে নতুন কোনো কিছু এঁকে দেওয়া যেতে পারে । অথবা নকশা নির্ধারিত রাখতে চাইলে রং পড়ার সাথে সাথে সেই জায়গা টা সাবান দিয়ে দিয়ে নিলেই রং টা উঠে যাবে।

৬. তৈরিকৃত পোশাক গরম পানিতে ধুলে রং টা দুর্বল হয়ে উঠে যাবে এবং নকশা নষ্ট হয়ে যাবে  তাই গরম পানিতে ধোয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

এছাড়াও বাস্তবিক কাজের সময় আরো কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হতে পারে। 

হাতে আঁকা পোশাকের যত্নে

শখের মসলিন বা জামদানি টা যেভাবে যত্ন করে ব্যবহার করতে ভালোবাসে মানুষ সেভাবেই হাতে আঁকা পোশাকের রয়েছে কিছু যত্নের প্রয়োজন। 

হাতে আঁকা পোশাকের ক্ষেত্রে যে কাজ গুলো করা যাবে না

১. হাতে আঁকা কাপড় কখনোই গরম পানিতে ধোয়া যাবে না।

২. কড়া ডিটারজেন্ট  ব্যবহার করা যাবে না।

৩. হাতে আঁকা পোশাক সরাসরি আয়রন করা থেকে  বিরত থাকতে হবে।

৪. কড়া রোদে দেওয়া যাবে না হাতে আঁকা শাড়ি বা পোশাক। রোদের প্রখর আলো রঙ নষ্ট করে দেয়।

৫. হাতে আঁকা শাড়ি বা পোশাক খুব বেশি আঁটসাঁট করে ভাঁজ করা যাবে না। হালকা ফুলকোভাবে ভাঁজ করতে হবে।

৬. অনেক কাপড়ের ভেতর মিশিয়ে চেপেচুপে রাখা যাবে না মোটেও। চেষ্টা করতে হবে হাতে আঁকা শাড়ি ও পোশাক ভিন্ন ড্রয়ার বা কম্পার্টমেন্টে রাখার।

হাতে আঁকা শাড়ি ও পোশাকের ক্ষেত্রে যা করা যাবে

১. হাতে আঁকা মসলিন, সিল্ক, এন্ডি, জয়শ্রী বা তসর এমনকি সুতি কাপড়ও ড্রাই ওয়াশ করলে সবচেয়ে ভালো হয়।

২. যদি হাতে আঁকা কাপড় সাধারণভাবে ধুতে হয়, তবে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

৩. শ্যাম্পু বা মাইল্ড কোনো ডিটারজেন্ট ব্যবহার করতে হবে। এতে কাপড় বা রঙয়ের কোন ক্ষতি হবে না।

৪. হাতে আঁকা শাড়ি বা পোশাক অবশ্যই উল্টো পিঠে আয়রন করতে হবে।

৫. ধোয়ার পর হাতে আঁকা কাপড় ছায়া ও শীতল স্থানে শুকাতে হবে।

৬. বাইরে থেকে এসে হাতে আঁকা শাড়ি বা পোশাক বদলে নিয়ে ফ্যানের বাতাসেই শুকিয়ে নিতে হবে।

৭. বড় বড় ভাঁজ করে শাড়ি গুছিয়ে হ্যাংগারে ঝুলিয়ে রাখলে বহুদিন পর্যন্ত ভালো থাকবে।

আশাকরি আজকের লেখাটি আপনাদের আনেক বেশি কাজে আসবে। আমি চেষ্টা করবো আপনাদের জন্য আরো বেশি লেখার। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

Blog Writer – Meherun Nesa

4 thoughts on “হ্যান্ড পেইন্টেড ড্রেস বা হাতে আঁকা পোশাক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *