Hand Painting

হ্যান্ড পেইন্ট কেমিক্যাল এর বিস্তারিত ধারণা !

hand painting chemical

কেমন আছেন সবাই। আশাকরি ভালো আছেন। আগের আর্টিকেলে আমরা কথা বলেছিলাম হ্যান্ড পেইন্ট করতে আমাদের কি কি প্রয়োজন আর তা আমরা কোথা থেকে সংগ্রহ করবো। আজ আমরা কথা বলবো হ্যান্ড পেইন্ট কেমিক্যাল নিয়ে। আশাকরি আপনাদের অনেক ভালো লাগবে এবং উপকারে আসবে।

আমরা আগেই জেনেছিলাম  এক্রেলিক কালার  এবং  এক্রামিন কালার দিয়ে মূলত আমরা হ্যান্ড পেইন্ট করবো।

আমরা জানি এক্রেলিক কালার হচ্ছে একটা রেডি করা রং।হ্যান্ড পেইন্ট করার জন্য রঙ রেডি করতে  যা যা লাগে, সব কিছু দিয়ে এটা বানানো। এটা ইন্ডিয়ান একটা  রং।  রং টা এমন ভাবেই বানানো যে আপনি শুধু বের করবেন আর আঁকবেন।

মনে করেন আপনি একটা ডিজাইন আঁকলেন,তা তে তুলি দিয়ে রঙ করবেন। এখানে আপনাকে কিছু মিশাতে হবে না। এটা যেহেতু রেডি কালার। এর কেমিক্যাল নিয়ে তেমন আলোচনা নাই। তবে এক্রামিন  এ কেমিক্যাল এর বিস্তারিত জানলে আপনি এক্রেলিক কিভাবে বানানো তা বুঝতে পারবেন।

হ্যান্ড পেইন্ট কেমিক্যাল এর ব্যবহার

এক্রামিন বানাতে গেলে আপনাকে যে কেমিক্যাল গুলো চিনতে বা জানতে হবে তার মাঝে অন্যতম হচ্ছে বাইন্ডার,এন কে , এপ্রিটন, হোয়াইট পেস্ট, নিউটেক্স । প্রাথমিক ভাবে এর বাইরে আপনাকে আর তেমন কিছু জানতে হবে না।

এই সব গুলা সম্পরকে আমরা এখন একটু জানার চেষ্টা করবো। প্রথমে আমরা বাইন্ডার সম্পর্কে জানি। 

hand paint chemicals

বাইন্ডার

বাইন্ডার মূলত এক ধরনের আঠা। এটা এক রকম পিগমেন্ট আঠা। বাইন্ডার কাপড়ে রং আটকিয়ে রাখে। বাইন্ডার টা যদি আপনি একটু নিয়ে কাপড়ে লাগান,  যেখানে লাগাবেন দেখবেন যে সেখানে একটা দাগ পড়ে গেছে। আর শুকানোর পর আপনি কাপড় টা যদি ধুয়ে দেন দেখবেন যে অই জায়গা তে একটা দাগ দেখা যাচ্ছে। রঙ ছাড়া শুধু  বাইন্ডার  দিলে ও এমন দেখা যাবে। এটা ই মূলত হ্যান্ড পেইন্ট এর কেমিক্যাল গুলার মাঝে লাগবেই লাগবে টাইপ একটা কেমিক্যাল।

এর সাথে এক্রামিন র কালার টা মিশিয়ে কাজ করতে হয়। এটা রঙ কে কাপড়ে পার্মানেন্ট করতে লাগে।

বাইন্ডার ২ ধরনেরঃ

ডাইসিন বাইন্ডার

স্টিকি বাইন্ডার

১.ডাইসিন বাইন্ডার

এটা মূলত পাতলা রঙের কাজের জন্য। মানে আপনি যদি খুব পাতলা করে রঙ বানাতে চান , তা হলে এই টা দিয়ে কাজ করবেন। যেমন হাফসিল্ক কিংবা মসলিন টাইপ কাপড় এ কাজ করতে গেলে একটু পাতলা করে রঙ বানাতে হয়, সে সময় ডাইসিন এর বাইন্ডার দিয়ে কাজ করলে রঙ পাতলা করতে কষ্ট কম হয়।

এখন কথা হচ্ছে এটা চিনবেন কি করে?? যে আপনার কিনা বাইন্ডার টা কোন বাইন্ডার??
আপনি যে বাইন্ডার টা নিলেন তা যদি দেখতে অনেক টা ভাত এর মাড় এর মত একটু ভারি ঘন হয় , তা হলে বুঝবেন এটা আপনার ডাইসিন এর বাইন্ডার। জল রঙ টাইপ কাজ করতে চাইলে এই টা আপনার অবশ্যই লাগবে।

যে খান থেকে ই ডাইসিন এর বাইন্ডার কিনেন না কেন, ভালো আর অরিজিনাল দেখে , জেনে কিনবেন।

ঘনত্ব ভাত এর মাড় এরর মতই হবে, এর চাইতে গাড়ও না আবার পাতলা ও না।

২.স্টিকি বাইন্ডার

যখন আপনি একটু ভারি করে রঙ বানাতে চাইবেন, মোটা কোন কাপড় এ কাজ করার জন্য , তখন আপনি এই স্টিকি বাইন্ডার টা ব্যবহার করবেন। এটা নিজেই এতটা ভারি যে , এটা দিয়ে বানানো রঙ ও অনেক ভারি, মানে বেশ গাড় হয় রঙ । পাতলা কাপড় এ কাজ করতে নিলে যেমন পাতলা করে রঙ বানাতে হয়, তেমনি মোটা কাপড় এ কাজ করতে নিলে গাড় করে রঙ বানাতে হয়, কারন মোটা কাপড়ে পাতলা রঙ দিলে আপনি রঙ টা কে খুজে পাবেন না। রঙ টা মনে হবে কাপড়ে হারিয়ে গেছে, সে জন্য মোটা কাপড়এর জন্যই মূলত গাড় করে রঙ বানাতে হয়। মোটা কাপড় বলতে বিছানার চাদর বা পর্দার কাপড় হতে পারে।

এখন কথা হচ্ছে স্টিকি বাইন্ডার চিনার উপায় কি?

দেখে ই চেনা যায়। ভাত এর মাড় এর মত দেখতে হলে যেমন আমরা বুঝি যে তা ডাইসিনের  বাইন্ডার  তেমনি এটা দেখতে খুব ঘন আঠার মত। সাধারনত গাম বা আঠা যেমন একটু ভারি টাইপ হয়, স্টিকি বাইন্ডার টা ও ঠিক তাই। কাত করে ঢাললে এটা সহজে গড়াবে না।

এ জন্যই আপনি যখন এটা দিয়ে রঙ বানাবেন তখন স্বাভাবিক ভাবে টা একটু গাড় হয়।

এখন আপনি  ডাইসিনের  বাইন্ডার  নিলেন নাকি স্টিকি বাইন্ডার তার উপর নির্ভর করে কাপড় টা ঠিক করবেন। তবে এটা কিন্তু এমন না যে স্টিকি বাইন্ডার দিয়ে আপনি পাতলা কাপড় কিংবা ডাইসিনের  বাইন্ডার  দিয়ে গাড় কাপড়ে কাজ করতে পারবেন না। 

আপনি শুধু এই টা জেনে রাখেন যে, হ্যান্ড পেইন্ট এ আপনাকে অবশ্যই বাইন্ডার  দিয়ে কাজ করতে হবে।

এনকে

বাইন্ডার যেমন একরকম আঠা, এন কে ও তেমনি এক ধরনের আঠা। এটা ব্যবহার করলে রঙ টেকসই হয়। কাপড়ে রঙের স্থানীত্ব বেশি হয়। এটা দেখতে অনেক টা দুধ এর মত। না বেশি পাতলা না ঘন। দুধ এর মত মিডিয়াম এর একটা ঘনত্ব। এটাকে আবার এন কে ফিক্সার ও বলে।

কাজ করার সময় আপনার এই টা ও লাগবে।

এপ্রিটন

এটিও এক ধরনের গাম বা আঠা।আমরা মূলত এন কে আর বাইন্ডার  দিয়ে রঙ টা বানাই। অনেক সময় এমন হয় যে, বানানো রঙ টা কিছু কাপড়ে ছড়িয়ে যায়।  কাপড়ে রঙ না ছড়ানোর জন্য এপ্রিটন ব্যবহার করা হয়।তবে এপ্রিটন এর পরিমাণ বেশি হলে রঙ উঠে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সাথে আবার কাপড়ে ও আঠালো একটা ভাব আসে। হাফসিল্ক বা মোটামুটি কোয়ালিটির কাপড়ে এপ্রিটন প্রয়োজন হয়।অন্যথায়,মসলিন বা সুতির কাপড়ে এপ্রিটন প্রয়োজন হয় না।

হোয়াইট পেস্ট

এন কে আর বাইন্ডার দিয়ে আমরা যে রঙ টা বানাই সে টা দিয়ে গাড় কালার যেমন কালো বা লাল রঙ এর কাপড়ে কাজ করলে রঙ টা দেখা যায় যে ফুটে না। তখন এই ধরনের কাপড়ে রঙ টা যে ফুটাতে রঙ এর সাথে আমরা হোয়াইট পেস্ট মিশিয়ে কাজ করি। তখন দেখা যায় যে কালো বা লাল এর মত গাড় কাপড়ে ও রঙ টা বেশ ফুটেছে। এটা মূলত টিটি পাউডার, এপ্রিটন, এন কে , বাইন্ডার  দিয়ে বানানো হয়। বাসায় এটা বানানো কষ্টকর সাথে সময় সাপেক্ষ। তাই ভালো হচ্ছে আপনি বাজার এর রেডি হোয়াইট পেস্ট কিনে কাজ করেন।

নিউটেক্স

এন কে আর বাইন্ডার দিয়ে রঙ বানালে দেখা যায় অনেক সময় কাপড় টা একটু আঠালো হয়। এই সমসসা টা যাতে না হয় , সে জন্য এন কে আর বাইন্ডার  এর সাথে পিজি গাম  দিয়ে নতুন একটা উপাদান বানানো হয়। যাকে নিউটেক্স বলে। এটা দিয়ে কাজ করলে কাপড় খুব সফট হয়। কোন আঠালো ভাব থাকে না। এন কে আর বাইন্ডার  আর পিজি গাম এর সাথে এপ্রিটন দেয়া হয় বলে এই রঙ টা কোন কাপড় এ ই ছড়ায় না। 

hand painted share
Painted By – শারমিন আক্তার আমেনা

হ্যান্ড পেইন্টে সাধারনত এই সকল ক্যামিকেল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সঠিক নিয়ম মেনে এই ক্যামিকেল ব্যবহার করলে আশাকরি আপনার কাজে কোন সমস্যা হবে না।

আশাকরি আজকের আলোচনা আপনাদের ভালো লেগেছে। আপনাদের মতামত কমেন্ট করে জানবেন। সবার জন্য শুভ কামনা।

Blog Writer – শারমিন আক্তার আমেনা

8 thoughts on “হ্যান্ড পেইন্ট কেমিক্যাল এর বিস্তারিত ধারণা !

  1. Ayesha Shiddicka says:

    আমরা এইগুলো কি ধরনের দোকান থেকে সংগ্রহ করতে পারি

    1. Md.Jakir Hossain says:

      এই কেমিক্যালগুলো কিভাবে /কোথায় পেতে পারি?

      1. কাপড়ে রং করার জন্য অনেক দোকান আছে যারা বিক্রয় করে অথবা আমাদের ফেসবুক গ্রুপে পেয়ে যাবেন অথবা এই ওয়েবসাইটে দেয়া নাম্বারে যোগাযোগ করুন।

    2. কাপড়ের জন্য রং বিক্রয় করে এমন অনেক দোকান আছে বাজারে

    3. অথবা এই ওয়েবসাইটে দেয়া নাম্বারে যোগাযোগ করুন।

  2. Tabasum Islam says:

    poriman ta ullekh korle valo hoto apu

    1. ইনশাআল্লাহ অন্য আর্টিকেলে জানিয়ে দেবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *